নাজমুল হুদা ও কামারুজ্জামানের 'মাথা গরম' তারা 'অপদার্থ'
Friday, July 31, 2009
প্রথমেই একচোট হেসে নেই। আমাদের দেশের নেতাদের বুদ্ধিশুদ্ধি সম্পর্কে জনগণ যে ধারণা মনে মনে পোষন করে তা এবার আইনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো। এজন্য আদালতকে হাজার কোটি ধন্যবাদ।
গত ৩ জুলাই ২০০৯ তারিখে হাইকোর্ট একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। পুরনো খবর। কিন্তু এটা নিয়ে দু'লাইন যদি আমার ব্লগে না লিখি তাহলে মনে শান্তি পাব না।
দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় যা লিখেছে, তা হুবহু কোট করি:
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দেয়া রায়ের সমালোচনা করায় বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে তিরস্কার করেছেন হাইকোর্ট। আদালতের রায় সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় এই দুই নেতাকে 'রং হেডেড পারসন' (সুস্থ মস্তিষ্কের নন বা মাথা গরম) ও 'ওয়ার্থলেস' (অপদার্থ) হিসেবে আখ্যা দিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার মামলাটি নিষ্পত্তি করে বলেছেন, যারা আদালতে ভাবমূর্তি এবং মর্যাদা সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না তাদের প্রতি রুল জারির কো প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তাদের হেদায়েত করবেন।" (লিংকটা পেলাম না, আজ তাদের সার্ভারে কোন সমস্যা হচ্ছে)
প্রথম আলো পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে-
আদালত বলেন, আদালত সম্পর্কে যাঁরা অবমাননাকর বক্তব্য দেন তাঁরা অসভ্য (রং হেডেড) ও অপদার্থ (ওয়ার্থলেস)। পরে আদালত আদেশে বলেন, ‘আদালতের মর্যাদা ও এখতিয়ার সম্পর্কে যাঁরা কোনো জ্ঞান রাখেন না তাঁদের বিরুদ্ধে রুল জারি করার কোনো প্রয়োজন নেই। আদালতে হাজির হওয়ার যোগ্যতাও তাঁরা রাখেন না। আল্লাহ তাঁদের হেদায়েত করুন।’
স্বাধীনতার ঘোষকসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে গত ২৯ জুন নাজমুল হুদা ও কামারুজ্বামান এই রায়কে হাইকোর্টের রায় নয়, ব্যক্তির রায় বলে অভিহিত করেন। তাঁদের এ মন্তব্য পরদিন বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত হয়।" (লিংক)
দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায় বলা হয়েছে (উপরের ছবিটাও ভোরের কাগজ থেকে নেয়া) :
হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে অবহিত না হয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে তারা অসুস্থ মস্তিষ্কের এবং অপদার্থ। যাদের আদালতের ভাবমূর্তি সম্পর্কে কোনো কাণ্ডজ্ঞান নেই তাদের বিরুদ্ধে রুলজারি করারও কোনো প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তাদেরকে হেদায়েত করবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উল্লেখ করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের প্রতি বিরƒপ মন্তব্য করায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে এক মামলার নিষ্পত্তি করতে গিয়ে হাইকোর্ট তাদের প্রতি এ ধরনের মন্তব্য করেন। (লিংক)
দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকা বিবিসি'র বরাত দিয়ে বলেছে
নাজমুর হুদা ও কামরুজ্জামান সম্পর্কে আদালতের পর্যবেক্ষণ
।। বিবিসি ।।
স্বাধীনতার ঘোষক সংক্রান্ত মামলার রায়ের সমালোচনা করায় বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করার আদালত অবমাননার মামলার পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদ্বয় রং হেডেড পারসন (সুস্থ মস্তিষ্কের নয়)। এদিকে বিডি নিউজ জানায়, আবেদনকারীর কৌঁসুলী মনজিল মোর্শেদ গতকাল বৃহস্পতিবার মামলা নিষ্পত্তির পর সাংবাদিকদের বলেন, আদালত যুক্তরাষ্ট্রের একটি রায়ের নজীর তুলে ধরে বলেছেন, ওই দেশের এক ব্যক্তি জাতীয় পতাকা অবমাননা করায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। আদালত বিচারকালে জানতে পারে, পতাকার যে মর্যাদা দিতে হয়, সে জ্ঞানই ওই ব্যক্তির ছিল না। তাই তার বিরুদ্ধে মামলাটিও নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়েছিল। (লিংক)
দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় এ বিষয়ে লেখে
হুদা-কামারুজ্জামান রং-হেডেড, অপদার্থ : হাইকোর্ট
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান রং হেডেড পার্সন বলে মনত্দব্য করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া তাদের অপদার্থ এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত। পাশপাশি তারা মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন না হওয়ায় তাদের বিরম্নদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করতেও অনীহা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদকে এ সংক্রান্ত অপর একটি আদালত অবমানানার মামলায় ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।
স্বাধীনতার ঘোষক সংক্রান্ত আদালত অবমাননার রায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ মনত্দব্য করেন ও আদেশ দেন। আদালত কয়েকটি পর্যবেক্ষণ দিয়ে নাজমুল হুদা ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করা আদালত অবমাননার মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেন এবং প্রফেসর এমাজউদ্দিনকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।
ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালত অবমানানার অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, যাদের বিরম্নদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হয়েছে তারা মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন নয়। হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে অবহিত না হয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে তারা অসুস্থ মস্তিষ্কের এবং অপদার্থ মানুষ। যাদের আদালতের ভাবমূর্তি সম্পর্কে কোন কান্ডজ্ঞান নেই তাদের বিরুদ্ধে রম্নলজারি করারও কোন প্রয়োজন নেই। আলস্নাহ তাদের হেদায়েত করবেন।
গতকাল এ মামলার শুনানি শুরু হলে বাদি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার আদালতে বলেন, গত ৩০ জুন পত্র-পত্রিকায় যে বক্তব্য এসেছে তা আদালত অবমাননার শামিল। এ কারণে তিনি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও কামারম্নজ্জামানের বিরুদ্ধে রুল জারির দাবি জানান। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএফএম মেজবাহ উদ্দিন আদালতে বলেন, তাদের বক্তব্য আদালতের মর্যাদার ওপর আঘাত হেনেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে রুল জারি করা হোক। তাদের দু'জনের বক্তব্য যদি আমলে না নেয়া হয়, তাহলে তা জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে। বিষয়টি আমলে নিয়ে কতিপয় পর্যবেক্ষণ দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির আবেদন জানান, এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এছাড়া আদালতে উপস্থিত ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের কাছে এ ব্যাপারে মন্তব্য চাওয়া হলে তিনি রুল ইস্যু না করে মতামত সহকারে বিষয়টি নিষ্পত্তির অনুরোধ করেন।
পরে আদালত যুক্তরাষ্ট্রের নজির তুলে ধরে বলেন, সেদেশে এক ব্যক্তি জাতীয় পতাকা অবমাননা করায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। পরে বিচারকার্য চলাকালে বিচারক জানতে পারেন পতাকার যে মর্যাদা দিতে হবে সে জ্ঞান ওই ব্যক্তির ছিল না। এ কারণ উণ্লেখ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। একইভাবে নাজমুল হুদা ও কামারুজ্জামানের ক্ষেত্রেও আদালত উপরোক্ত পর্যবেক্ষণ দিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেন। (লিংক)
আসলে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী এই পার্টি দু'টির নেতারা কেমন তা বোঝার জন্য এই খবরটিই যথেষ্ঠ। ব্যানাহুদা তো আগেই তার কাণ্ডজ্ঞানহীন ও এলোমেলো বক্তব্যর জন্য 'ব্যা ব্যা হুদা' বলে পরিচিত পেয়েছিলেন, এখন সেই কাতারে জামায়াতে ইসলামীর নেতা কামারুজ্জামানও জামাত করে দাঁড়িয়ে গেলেন। মারহাবা! মারহাবা!!
আদালত প্রমাণ করেছে যে 'ব্যানাহুদা' ব্যারিস্টার হতে পারেন, কিন্তু আদালতের মর্যাদা কি জিনিস তা তিনি জানেন না। এর আগে তিনি একজন বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিলেন, তা থেকেও বোঝা যায় যে ব্যানাহুদা আদালতকে বাপের বাড়ির কিছু একটা বলে মনে করেন। আশা করি এই রায়ে তার কিছুটা শিক্ষা হবে। Read more...