শিক্ষাভাবনা
Wednesday, August 20, 2008
আমার ব্লগের http://amarblog.com/geducacha/5637 এই লেখাটির মন্তব্যঘরে আমি নিচের মন্তব্য করেছি।
পড়ে কান্না পেয়ে গেল। আমি জানিনা আপনি নিজে টিচার কি না। কিন্তু আপনি আমাদের মনে কথাগুলোই বলেছেন। যে সমস্যাগুলোকে উল্লেখ করেছেন, তা হয়ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক ও অনার্স কলেজভেদে পার্থক্য আছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে ঠিক আছে। সকল শিক্ষকদের এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এগুলো কিছু সাধারণ সমস্যা। নাসরিন সুলতানা আপা যা বলেছেন তার সাথে একমত। তিনি যেগুলো বোঝেন নাই, আমি সেগুলো বুঝেছি কি না তা আপনাকে জানাই।
>> ৩। প্রত্যেকটা বিদ্যালয় একেকটা পরিসংখ্যান আফিস হয়েছে।
এটা সম্ভবত প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্পর্কে বলা হয়েছে। হয়ত হুবহু পরিসংখ্যান অফিস নয়, কিন্তু অনেকটা তাই। কতজন ছাত্র, কতগুলো বই, কতগুলো বিস্কুট ইত্যাদি নিয়েই শিক্ষকদেরকে সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হয়।
>> ৫। প্রত্যেকটা বিদ্যালয় বিশেষগগদের জন্য গবেষনা ক্ষেত্র হয়েছে।
আসলেই তাই। এক একজন পণ্ডিত বিদ্যালয়গলো নিয়ে নানারকম গবেষণা করেন। বিশেষত 'শিক্ষাবিজ্ঞান' বিষয়ের। আর অতিমূল্যবান সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। যাহা অতি অতি মূল্যবান গবেষণাপত্র হিসেবে লাইব্রেরির কোনায় পড়ে থাকে। বিদ্যালয়গুলোর কোন কাজে লাগে না।
>> ৭। প্রত্যেকটা বিদ্যালয় নিজে গিনিপিগ হয়েছে।
আসলেই তাই। সরকার, দাতা সংস্থা সবাই বিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে, ছাত্রদেরকে নিয়ে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়। আজ এই নিয়ম, কাল ওই নিয়ম, কিন্তু ফলাফল শূন্য।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার এত বৎসর হয়ে গেল। এখনও একটি শিক্ষানীতি আমরা তৈরি করতে পারলাম না। শিক্ষা নিয়ে অদ্ভুত এক গতিময়তা আমাদের। যাত্রা আছে, গতিও আছে কিন্তু উদ্দেশ্য নেই। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আছে। ভাঙা হোক আর দ্বিতল হোক, অবকাঠামো আছে, কম বেতন পাক আর বেশি বেতন পাক, সম্মান পাক আর না পাক, কম হোক বেশি হোক, শিক্ষক আছেন, কিন্তু কোন শিক্ষানীতি নাই। কেন পড়ছি, কোন পড়ব, কি পড়াব, কেন কোন উদ্দেশ্যে পড়াব এ জন্য কোন জাতীয় মতামত নাই। আমরা জাতির পিতা, ভ্রাতা, মাতা প্রশ্নে মাথা ফাটাতে পারি। সুন্দরবন, কক্সবাজার প্রশ্নে সরকারিভাবে লাফাতে পারি, কিন্তু শিক্ষাপ্রশ্নে কোন কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারি না। আমরা ধর্ম, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে সৌদি, পাকিস্তান, ভারতের দালালী করি। বলি যে তাদের যা ভাল তা নিতে কোন বাধা নেই। কিন্তু তাদের শিক্ষানীতিগুলো থেকে আমরা কিছু গ্রহণ করি না কেন?
গেদুচাচা সমস্যা বিস্তৃত, জালের মত। কোনটা ছেড়ে কোনটার সমাধান করবেন?
আমাদের সেনাবাহিনী বসে বসে ঘাস কাটে। স্বাধীনতার পর এরা কোন বিদেশী দেশ দখল করে বাংলাদেশের সীমানা বাড়াতে পারেনি, কিন্তু দেশের সিংহাসন দখল করতে খুব বীরত্ব দেখিয়েছে। বারবার নিরস্ত্র, ক্ষুধার্ত, দুর্বল জনগণের অধিকার অস্ত্রহাতে কেড়ে নেবার কৃতিত্ব প্রকাশ করেছে। আর পেরেছে রেডিসন, ও ডিওএইচ..??....(সেনাবাহিনীর আবাসিক এলাকা) তৈরি করতে। অথচ এদেরকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। যদি সত্যি কোনদিন ভারত/চীন/মায়ানমার আক্রমণ করে, তাহলে আমি নিশ্চিত আমাদের বীর (?) সেনাবাহিনী কিছুই করতে পারবেনা। কিছু করলে বাংলাদেশের হাড্ডিসার জনগণই করবে।
আমি মনে করি- বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে বা আয়তন কমিয়ে তাদের সমস্ত সম্পতি বা অর্ধাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা দরকার। মাদ্রাসা শিক্ষা বা ধর্মীয় শিক্ষাকে মূলধারার মর্যাদা না দেয়া। বিএড বা বিভিন্ন টেকনিক্যাল ট্রেনিং যেমন অধিকতর যোগ্যতা বলে বিবেচিত হয় তেমন করা। কেউ ডিগ্রী পাস করার পর যদি ইচ্ছা করে তাহলে ধর্মীয় শিক্ষা নেবে। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত সকলকে একইরকম শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
যা হোক, লেখাটি অনেক বড় হয়ে গেল। নিজের ব্যক্তিগত ভাবনাগুলো প্রকাশ করলাম। গেদুচাচাকে (C)
0 comments:
Post a Comment