আজ রক্তাক্ত ২১ আগস্ট

Wednesday, August 20, 2008

আজ রক্তাক্ত ২১ আগস্ট। প্রথম আলোর খবরে লিখেছে-

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের বিকেল। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সমবেত হাজার হাজার মানুষ। খোলা ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হবে সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রা।
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক পাঁচটা ২২ মিনিট। "জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু" বলে বক্তৃতা শেষ করে শেখ হাসিনা হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে এগোতে থাকলেন মঞ্চের সিঁড়ির দিকে। মুহুর্তেই বিকট শব্দে বিস্কোরিত হতে লাগল একের পর এক গ্রেনেড। আর জীবন্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ মুহুর্তেই পরিণত হলো মৃত্যুপুরীতে।
আজ সেই বিভীষিকাময় একুশে আগস্ট। আওয়ামী লীগের সমাবেশে মর্মান্তিক গ্রেনেড হামলার চতুর্থ বার্ষিকী। এ হামলায় শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। দলের কেন্দ্রীয় মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ নিহত হন দলের ২২ জন নেতা-কর্মী। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন বলে দাবি করা হয়। আর আহত হন দলের অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ নেতাসহ পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী। আইভি রহমানের স্বামী আওয়ামী লীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লুর রহমানও এ ঘটনায় আহত হন।
দেশে জরুরি অবস্থা থাকায় আজ সীমিত পরিসরে ২১ আগস্ট পালন করতে হচ্ছে। তবে গ্রেনেড হামলার সময় বিকেল পাঁচটা ২২ মিনিটে ঘটনাস্থলে এবার কর্মসুচি থাকছে। দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সরকারি নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে এই নারকীয় ঘটনার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। তদন্তের নামে এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ ঘটনা পুনরায় তদন্ত করে ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
যাঁরা নিহত হন: আইভি রহমান, শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান, হাসিনা মমতাজ, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ সেন্টু, লিটন মুনশি ওরফে লিটু, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসিরউদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।
জিল্লুর রহমানের বাণী: দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লুর রহমান এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে সুষ্ঠু তদন্ত না করার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করেন। তবে নতুন করে তদন্ত করার জন্য তিনি বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার এ ঘটনার অনেক রহস্য উন্েনাচন করেছে। তিনি ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানান।
কর্মসুচি: আওয়ামী লীগের কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে আজ বিকেল পাঁচটা ২২ মিনিটে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঘটনাস্থলে দুই মিনিট দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। পাঁচটা ২৬ মিনিটে প্রতিবাদ সমাবেশ। প্রতীকীভাবে এ কর্মসুচি সারা দেশে পালিত হবে।
এখনও এই বর্বর ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় নাই এটা ভাবতেই নিজেকে দুর্বল মনে হয়। মনে হয় মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকা সত্যিই কতই না কঠিন। এরকম কেন হবে? আমরা কি মানুষ নই। বর্বররা না হয় মানুষ নাই হল, কিন্তু বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি পারত না এই ভয়াবহ ঘটনার একটু সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন করতে? তারা তো অন্যান্য অনেক বিষয়ে নিজেদেরকে জড়িত করেছে। কিন্তু এটাকে বাদ দিয়েছে কেন?

0 comments:

Post a Comment

Blog Archive

মুক্তমনা বাংলা ব্লগ

  © Dristipat

Back to TOP